গরম যেন কমছেই না। ঘরে-বাইরে পরিশ্রান্ত সবাই। এ সময় খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে থাকতে হবে সচেতন। গরমে গুরুপাক খাবার খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। আবার প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীর হারায় প্রয়োজনীয় পানি ও লবণ। সতর্ক থাকতে হবে সে ব্যাপারেও। গরমে কেমন হওয়া উচিত খাদ্যাভ্যাস? এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার নাহিদ। তিনি বলেন, এ সময় সহজে পরিপাক হয়, এমন খাবার খাওয়া উচিত। আর অবশ্যই প্রচুর পানি পান করতে হবে। তাঁর আরও কিছু পরামর্শ দেখে নিন।
নাশতা-পানি সমাচার
সকালে রুটি বা পাউরুটি খাওয়া যেতে পারে। রুটির সঙ্গে সবজি আর ডিম খেতে পারেন। তবে কড়া করে ভাজা ডিম এই গরমে ক্ষতিকর হতে পারে। ডিম খেলে আবার কারও কারও হজমে সমস্যা হয়। তাই যাঁরা আগে প্রতিদিন দুটি করে ডিম খেতেন, তাঁরা একটি করে ডিম খেতে পারেন। আর শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের হজমে সমস্যা হলে এক দিন পর পর একটি করে ডিম খেতে দেওয়া যায়।
বেলা ১১টার দিকে তাজা ফলের রস, সালাদ, রাইতা বা লাচ্ছি খেতে পারেন। তবে দিনের যে সময়ই সালাদ খেতে চান, তা তৈরি করতে পারেন দই বা টকদই দিয়ে। মেয়োনেজ বা এ ধরনের তৈলাক্ত সালাদের ড্রেসিং এড়িয়ে চলুন।বিকেলের নাশতা সারতে পারেন দুধের তৈরি কোনো খাবার দিয়ে। ফলের রসও পান করতে পারেন এর পরিবর্তে। চলতে পারে স্যুপ বা নুডলস। তবে নুডলস একদম ভাজা ভাজা না করে একটু ঝোলের মতো রাখুন।
পেঁয়াজু, পুরি, বার্গার, পিজ্জা ও যেকোনো ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করা উচিত। বাইরের ফুচকা, চটপটি বা এ-জাতীয় খাবারে সাবধান, কারণ, এসব খাবারের মাধ্যমে জন্ডিস, টাইফয়েডের মতো অসুখ ছড়াতে পারে।দুপুর ও রাতের খাবার
দুপুর ও রাতে খেতে পারেন ভাত। আবার চাইলে খেতে পারেন পাউরুটিও। ভাতের সঙ্গে রাখুন পাতলা ডাল। টক ফল দিয়ে টকডাল রান্না করতে পারেন। •মাংসের চেয়ে মাছ খাওয়াই বেশি ভালো। যে তরকারিই খান না কেন, তা পাতলা ঝোল করে রান্না করুন। ভাজাপোড়া ও ভুনা খাবার এড়িয়ে চলুন। আর মাংস খেলে বেছে নিন মুরগির মাংস। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন।সারা দিন পানি ও ফল
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন গড়ে তিন লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত। ফোটানো বা ফিলটার করা পানি পান করুন।
পানি ছাড়াও বিভিন্ন পানীয় শরীরের জন্য বেশ উপকারী। লেবু পানি, চিনির শরবত, ডাবের পানি ও বিভিন্ন ফলের রস পান করতে পারেন। তবে রাসায়নিকযুক্ত পানীয় ও কোমল পানীয় না খাওয়াই ভালো। তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস, নাশপাতিসহ বিভিন্ন পানিজাতীয় ফল খান।
এই সময়ে নিমন্ত্রণ
গুরুপাক খাবার ছাড়াও আনা যায় বৈচিত্র্য। শুরুতে হালকা কোনো স্যুপ পরিবেশন করতে পারেন। ক্লিয়ার স্যুপ, সবজির স্যুপ বা মুরগির স্যুপ দিতে পারেন। তবে থাই স্যুপ তৈরি করলে তাতে মাখন বাএ-জাতীয় কিছু না দেবেন না।
পোলাও রান্না করতে ঘিয়ের পরিবর্তে সয়াবিন তেল ব্যবহার করতে পারেন।
মাছভাজা করতে চাইলে সাধারণ তেলে মাছ ভাজুন। ডালডা বা এ-জাতীয় কিছু দিয়ে মাছ ভাজবেন না, আবার খুব কড়া করেও ভাজবেন না।
মুরগির মাংসের বিভিন্ন পদ তৈরি করতে পারেন।
গরু, খাসি বা হাঁসের মাংস রান্না না করাই ভালো। মাংস রান্না করলেও অবশ্যই চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করবেন।
খাবারের শেষে দই, দইয়ের লাচ্ছি অথবা বোরহানি দিতে পারেন অতিথিকে। তবে পারলে সেসব ঘরেই বানান৷
বাইরে থেকে কিনে আনা মিষ্টির পরিবর্তে দিতে পারেন ঘরে তৈরি মিষ্টি। তবে ঘরে মিষ্টি তৈরি করলেও তাতে ঘি ব্যবহার করবেন না।
ফলের রসও দিতে পারেন অতিথিকে।


No comments:
Post a Comment