এই গরমে শরীর মন শুধু খোঁজে শীতল আরাম। রইল আপনাদের জন্যে আরামের খোঁজ।যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের জন্য সুতি ও ভয়েল কাপড় বেশি উপযোগী। মেয়েরা ফতুয়া বা সালোয়ার-কামিজ বেছে নিতে পারেন। ব্লক প্রিন্টের নকশা করা পোশাক পরতে পারেন গরমে। ঘরে পাতলা কাপড়ের টপ পরতে পারেন। ছেলেরা ফতুয়া বা টি-শার্ট পরতে পারেন। যেসব অফিসে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আছে, সেখানে ফুলহাতা শার্ট পরা গেলেও বাড়ি ফেরার সময় গরম লাগতে পারে। তাই বেছে নিতে পারেন হাফহাতা শার্ট। পোশাকের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নিন। হালকা রঙের কাপড় শরীরে তাপ ধরে রাখে না আর এতে মনেও আসে প্রশান্তি।
বাইরে বেরোলে
বাইরে বেরোলে সঙ্গে রাখুন ছাতা, সানগ্লাস, সানব্লক ক্রিম, বিশুদ্ধ পানি। আর প্রয়োজন ছাড়া প্রচণ্ড রোদে বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সুস্থ থাকুন
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক অনুপকুমার সাহা বলেন, ‘গরমের সময় জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, পেটের পীড়া ও ত্বকের কিছু সমস্যা হতে পারে। শ্বাসকষ্টের কোনো কোনো রোগীর দুর্ভোগ বাড়তে পারে তাপমাত্রার এ পরিবর্তনে।
তবে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এড়াতে পারলে পেটের পীড়া থেকে বাঁচা যায়।’
গরমে ভালো থাকতে তাঁর কিছু পরামর্শ—
- বাইরে বেরোলে ছায়া আছে এমন স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
- পানি ও পানিজাতীয় ফল খান।
- বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয়,
যেমন: খোলা তরমুজ,
বাঙ্গি বা লেবুর শরবত
গ্রহণ না করাই ভালো।
- বাইরে থেকে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই
শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ঠান্ডায় থাকতে শুরু করবেন না।
হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ঢাকারসেন্ট্রাল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডায়েটিশিয়ান (পথ্যবিদ্যা বিশারদ) ওপুষ্টিবিদ মাহ্মুদা নাজনীন বলেন, ‘গরমে প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করতেহবে। সঙ্গে প্রচুর ডাবের পানি ও লেবুর শরবত পান করতে পারেন।’ - তাঁর আরও কিছু পরামর্শ জেনে নিতে পারেন।
- রেফ্রিজারেটরের পানি না পান করাই ভালো। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতেই শরীরের উপকার হয়।
- পারলে এক বেলা শুধু তরমুজই খান।
- ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। বিরিয়ানি ও ফাস্টফুড খাবেন না।
- সবজি ও মাছ না ভেজে পাতলা ঝোল করে রান্না করুন।
- রান্নার সময় তরকারিতে ঝাল-মসলা কম দিন।
- দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের তরমুজ, লিচু ও আঙুর দেওয়া চলবে না। এতে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
অন্দরে আরাম
রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের প্রধান ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘গরমের এই সময়ে অন্দরসাজে একটু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এতে ঘরে থাকবে প্রশান্তি।’
এই সময়কার অন্দরসজ্জার ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
- ঘরে কার্পেট রাখলে তা এখন সরিয়ে ফেলুন। এর চেয়ে বরং বসার ঘরের মেঝের একপাশে রাখতে পারেন শীতলপাটি। শীতলপাটিতে রাখতে পারেন ছোট-বড় নানান আকারেরকুশন।
- ঘরে হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করুন। পর্দার কাপড়েসাদার মধ্যে ব্লক প্রিন্ট বা এমব্রয়ডারি করা থাকতে পারে অথবা সেটিতেবর্ডার থাকতে পারে। আর পর্দা অবশ্যই হতে হবে সুতি কাপড়ে তৈরি।
- ঘরে খুব বেশি রোদ এলে পর্দার পেছন দিকটা ভারী কাপড়ে তৈরি করুন আর সামনেটায় থাকবে সাদা কাপড়।
- বাসায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র না থাকলেও পেতে পারেন ঠান্ডা আমেজ। এক বোতলহালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে নিয়ে তা স্প্রে করে দিনঘরের পর্দায়। এতে ঘর ঠান্ডা থাকার পাশাপাশি ঘরে পাবেন সুগন্ধি।
- আপনার বাসাটি উঁচুতলায় হলে ঘরের জানালা সারা দিনই খোলা রাখতে পারেন। তবেআপনি যদি হন প্রথম থেকে তৃতীয় তলার বাসিন্দা, সে ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর থেকেভোর পর্যন্ত ঘরের জানালা খোলা রাখতে পারেন। সকাল ১০টার পর, বিশেষ করে যেসময়টায় মানুষের ব্যস্ততা বেশি থাকে, সেই সময়ে যতটা পারা যায়, ঘরের জানালাকম খুলুন। তাতে ঘরে ধুলাবালি ঢুুকবে কম।
- ঘরে কম আসবাব থাকলে ধুলা জমবে কম।
- শোবার ঘরে বিছানার চাদরের ওপর বিছিয়ে
দিন শীতলপাটি। ভেজা কাপড় দিয়ে পাটি ভিজিয়ে নিয়ে ঘরের ফ্যান ছেড়ে রাখুন।
- যেকোনো ঘরের কোণে
খানিকটা জায়গা পেলে সেখানে মাটির বড় চাঁড়িতে পানি রেখে সেটিতে ভাসমান মোমবাতি, গোলাপ, গাঁদা ফুলের পাপড়ি, কচুরিপানা বা অন্য জলজ উদ্ভিদ
রাখুন। তবে ঘরে শিশু থাকলে বা ঘর ছোট হলে এটি রাখতে পারবেন না।
- ঘরের যেখানেই জায়গা পাবেন, সেখানেই গাছ রাখুন। বনসাইও রাখতে পারেন। এতে ঘর সবুজ ও ঠান্ডা থাকে।
No comments:
Post a Comment